Saturday 30 March 2019

ডায়েরীর পাতায় ট্যানিফ্লোরাম রোডিওলা



Image result for cartoons of science laboratory
 বিখ্যাত নন্দী বাড়ীতে যাতায়াত সেই ছোট্ট থেকেই এখানে বলে রাখি নন্দী পিসো দূর সম্পর্কের আত্মীয় হলেও নিজের পিসোর চেয়ে কম আদর করতেন না উনি বছরখানেক হল গত হয়েছেন এখন পিসির আদর খাওয়া আর মাঝে মধ্যে গিয়ে খবরাখবর নেওয়া আমার দায়িত্বের মধ্যে পরে গেছে যাকগে , কাজের কোথায় আসি পিসির ফোন পেয়ে পরদিন সকালে আমার কাজ সেদিনের মত মুলতুবি রেখে বাইকে চেপেই রওনা হলাম
জানুয়ারি মাসের ঠাণ্ডা জমিয়ে পরেছে এবার তাই পৌঁছাতে একটু দেরী হল সকালের জলখাবার রাজকীয় ভাবে সারার পর  পিসি আমাকে একটা চামড়ায় মোড়া ডায়েরী গোছের খাতা ধরিয়ে দিয়ে বললেন , “ টুনু এটা তোর পিসোর আমি সেদিন ওর বইপত্তর ঝারাঝারি করতে গিয়ে একটা চিঠি পাইজিজ্ঞাসু মুখ করে তাকিয়ে থাকতেই আমার মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে বললেন , “ ওটাতে তোর নাম লেখা আছে , একবার পরে দেখিস
স্নেহের টুনু ,                                                                             তারিখ০৬-১২-১৭
            দুটি গাছের ফুল থেকে ওষুধ একটা বানাই যার পোশাকি নাম ট্যানিফ্লোরাম রোডিওলা ; এতে মানুষের আয়ু কয়েকগুণ বেড়ে যাবে এই ওষুধের প্যাটেন্ট একমাত্র আমিই জানি আর জানে প্রোফেসর ডোনাল্ড উনি দ্য সিটি ইউনিভার্সিটি অফ নিউ ইয়র্কে দীর্ঘকাল ভারতীয় ভেষজ নিয়ে গবেষণা করছেন
আমার আবিষ্কারের বিষয়ে উনিই প্রথম আমাকে উৎসাহ দিয়েছিলেন অন্যদের মত প্রোফেসর ডোনাল্ড এই বিষয় জানলেও তৈরী করার প্রণালী জানেন না , জানতে চানও নি আমি ওর কাছে ৬ লাইনের একটা ধাঁধাঁ রেখে গেছি আমার কিছু হলে নিজের পরিচয় দিবি আর তোর পিসির কাছে একটা চাবি আছে যা তোকে সাহায্য করবে , ওটা নিবি
ভালো থাকিস
                                                                                      তোর পিসো
                                                                                ডঃ বঙ্কু বিহারী নন্দী
পুনশ্চ ঃ- ধাঁধাঁ সমাধান করতে পারলে তুইই হবি তার উত্তরাধিকারী
আমি রোহিতাশ্ব রায় , প্রানী বিদ্যায় ডক্টরেট শেষ করে কলেজে এক বছর হল জয়েন করেছি বন্ধুরা সংক্ষেপে রোহিত বলে ডাকে এত তাড়াতাড়ি নিউ ইয়র্কের ভিসা পাওয়া মুশকিল , তবে পেলাম কিছুদিনের টুরিস্ট ভিসা আগেভাগে প্রোফেসর ডোনাল্ডকে বিষয়টা সংক্ষেপে জানিয়েছি তার উদার মনের পরিচয় পেলাম তখনই যখন জানালেনমাই ডিয়ার কাম সুন অ্যান্ড স্টে উইথ মি আমারও বয়েস হয়েছে যথেষ্ট , জাস্ট ফুলফিল দ্য ড্রিম অফ ইউর আঙ্কেল
আগে কোনদিন বিদেশের মাটিতে পা দেই নি কলকাতা থেকে জেট এয়ার ভায়া মুম্বাই হয়ে দীর্ঘ বারো হাজার কিলোমিটারের পথ পাড়ি দিয়ে যখন জন এফ কেনেডি বিমান বন্দরে নামলো তখন নিউ ইয়র্কে গোধূলির লালিমা প্রোফেসর ডোনাল্ড গাড়ী পাঠিয়ে দিয়েছেন চেকিং পর্ব শেষ করে বাইরে আসতেই দেখি একটা হাত আমার ছবি আর নাম লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে অপেক্ষা করছে পরিচয়ে জানলাম দীর্ঘদেহী ছেলেটি আফ্রিকান-আমেরিকান সাত সমুদ্র তেরো নদী পারের এক অতি উন্নত শহরের বুকে দাঁড়িয়ে ছেলেটির নামটা শুনে বেশ তাজ্জব হলাম , অ্যাবিনুশ মজা পেলাম মনে মনে , মনে হল খুব কাছের একজন মানুষকে পেয়ে গেছি আমি মুচকে হেসে বললাম ,” তোমাকে অবিনাশ বলে ডাকলে অসুবিধা নেই তো ?” “ নো স্যার ইউ মে…” সংক্ষিপ্ত কথার মাঝেই গাড়ী স্পীড তুলল গাড়ী চালাতে চালাতে অবিনাশ জানালো , “ আপনি তো লেট প্রোফেসর ব্যাঙ্কুর আত্মীয় , হি ওয়াস মাই ডিয়ার পারসন ভীষণ নলেজ স্পেশালি যখন আফ্রিকান-আমেরিকানদের ইতিহাস ও অত্যাচার নিয়ে বলতেন তখন মনেই হত না যে উনি বিজ্ঞানের মানুষ
কথাটা ভুল বলে নি অবিনাশ এই দেশে কালো আর সাদার পার্থক্য অনেকটাই প্রকট হয়েছিল পিসো একবার গল্প করতে করতে বলেছিল  ১৯২০ থেকে ১৯৭০ পর্যন্ত আমেরিকার পাবলিক সুইমিং পুলে কালোদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষেধ ছিল পরবর্তীকালে ষাট ও সত্তরের দশকে জন কেনেডি , রিচার্ড নিকসন এবং রোনাল্ড রিয়েগান রাষ্ট্র নায়কদের প্রচেষ্টায় এই ঘৃণ্য বিভাজন বন্ধ হয়
ঘড়িতে দেখলাম প্রায় আটত্রিশ মিনিট অতিক্রান্ত লোয়ার ম্যানহাটন ক্রশ করে খানিকটা এগোতেই লিওন্যার্ড স্ট্রিট গন্তব্যে এসে গেছি অভ্যর্থনা জানালো মিসেস নালা , প্রোফেসর রোনাল্ডের কেয়ারটেকার বছর পঞ্চান্নর মহিলা মিষ্টি হেসে আমাকে ভিতরে ডাকলেন এবং জানালেন প্রোফেসর হাডসন নদীতে মাছ ধরতে গেছেন, খানিক পরেই চলে আসবেন কথায় কথায় ভদ্রমহিলা জানালেন অ্যাবিনুশ তারই ছেলে , পড়াশনায় ভালো এখানকার প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে পড়ে
বেশ শীত এখানে প্রোফেসর সখের মাছ ধরে চলে এসেছেন কিছুক্ষণ আগেই আমি ঘুমিয়ে পরেছিলাম ডিনার খেতে খেতে প্রোফেসর বললেন , “ ওয়েল মাই বয় উই উইল টক টুমারোএখন ফুল রেস্ট নাও দেখলাম খানিক ন্যুব্জ হয়ে গেছেন বয়েসের ভারে
ঘুম ভাঙল খানিক বেলা করেই ঝকঝকে নীলাকাশ বাংলো টাইপের ঘরের সামনেই সবুজ গালিচার মত ঘাস সামনের চেয়ারে গিয়ে বসতেই প্রোফেসর নিজের হাতে কোকো বানিয়ে দিলেন স্বাদটা বেশ তিতকুটে কিন্তু ঠাণ্ডার জন্য ভালো আমার মুখের অবস্থা দেখে বৃদ্ধ হো হো করে হেসে ফেললেন হাসি থামিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন , “ তোমাদের মুখে চা সেট করে গেছে , তোমার পিসোও পছন্দ করতেন না জানো বাই দ্য ওয়ে যে কারনে তোমার আসা
আমি মাঝ পথেই বললাম , “ স্যার , ওটা আসলে কী ? কারণ ওই নামে তো সায়েন্সে এখনো কিছু নেই !”
-         “ আসলে ওই লিকুইডটা দুটো ভারতীয় ভেষজের অদ্ভুত মিশ্রণ । তোমাদের পরিচিত অথচ তিনি এমন এক জৈব আবিষ্কার করলেন যা তার মতে মানুষের আয়ু বহুগুণ বাড়িয়ে তোলে ।“
-         কোন পরীক্ষা করেছিলেন ? না , অনুমান ! কারণ আমি যতদূর জানি টেলোমারেস আয়ু বৃদ্ধির জন্য অনেকটাই দায়ী
-         রাইট মাই ডিয়ার প্রোফেসর নন্দী ইঁদুর , ড্রসোফিলা জাতীয় একধরণের মাছির দেহে ট্যানিফ্লোরাম রোডিওলার লিকুইড ইঞ্জেক্ট করে সুফলও পান
বৃদ্ধ ডোনাল্ড চেয়ার থেকে উঠে এগিয়ে এসে আমার কাঁধে হাত রেখে বলেন , “ ভাবছো মানুষের দেহে প্রয়োগ হয়েছে কিনা তাই তো !” আমি ওনার দিকে নির্বাক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকলাম প্রোফেসর বাঁধানো ঝকঝকে দাতে এক টুকরো হাসি হেসে বললেন , “ মাই বয় তোমার পিসোর ইচ্ছা ছিল এই পরীক্ষাটা আমার উপরে করার কিন্তু…” কথাটা না শেষ করেই আকাশের দিকে আঙুল দেখালেন
-         আপনি কী চান স্যার ?”
-         আমি তুমি করতে পারবে আমার উপর ? দেখো যদি আরও কিছু বছর বেঁচে যাই
কথাতে এতটাই মশগুল যে খেয়াল করি নি অবিনাশ এসে হাজির চোখাচোখি হতেই অবিনাশ হাতে রাখা ব্রেকফাস্টের ডিশ দুটো টেবিলের উপর রাখলো বুঝলাম ও খানিক আগেই এসেছে কিন্তু কথার মাঝে কোন বাধা দিতে চায় নি অথচ আমার মনের মধ্যে কেন জানি না ওর উজ্জ্বল চোখ দুটো বারবার ঘুরেফিরে আসছিলো প্রোফেসর ডোনাল্ডের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করলো , “ আজ বাইরে যাবেন তো , গাড়ী কী রেডি করবো ?”
প্রোফেসর  কথার ঘোরে ছিলেন কিছুক্ষণ পর বললেন , “ উমম্কিছু বললেহ্যাঁনা আজ বরং বাদই দাও কেন জানি না কদিন ধরে শরীরটা ঠিক যাচ্ছে না
ওষুধটা খেয়ে নিন ভাল লাগবেবলেই অবিনাশ নিজের পকেট থেকে কালচে গোল ট্যাবলেট বার করে দিল প্রোফেসরের চোখেমুখে একটা বিরক্তির ছাপ , “ইটস্নট ওয়ার্কিং,ডাক্তার ডাকো বলেই বৃদ্ধ নিজের ছড়িতে ভর করে ঘরের দিকে পা বাড়ালেন খানিকটা গিয়েই আমার দিকে তাকিয়ে বললেন , “ ডিয়ার আজ রাতে কিন্তু করতেই হবে প্রোফেসর চলে যেতে আমি অবিনাশকে জিজ্ঞাসা করলাম , “ এটা কী ওষুধ ?”
স্যার এটা ভেষজ ট্যাবলেট বাটওকে আই উইল কল ডক্টর কথাটা সেরে খানিকটা ক্ষোভের সাথে মাথা নাড়াতে নাড়াতে বাইরে বেড়িয়ে গেল লোহার পেল্লাই দরজা খুলে আমিও একটু অবাক হলাম ওর ব্যবহারে , অদ্ভুত পরিবর্তন
প্রোফেসর সেই রাতে আরও দুর্বল হয়ে পরলেন ডাক্তার আসলেন কিন্তু ঠিক ধরতে পারলেন না তিনি বারবার তাকে ভর্তি করার কথা বলেও রাজী করাতে পারলেন না , অবশেষে কয়েকটা ওষুধ লিখে দিলেন প্রোফেসরের চোখ দুটো বন্ধ , গায়ের রঙ ফ্যাকাসে কালচে অবিনাশ দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিতে গেল ডাক্তারকে মিসেস নালা আফসোসের সুরে আমাকে বললেন , “ওর এই একটা সমস্যা , কিছুতেই হসপিটালে ভর্তি হতে চান না শরীর খারাপ করলেই অ্যাবিনুশকে নিজের ল্যাবরেটরি থেকে ওষুধ আনতে বলেন আর সেটাই খান ।“
শুনে আমি বললাম, “ মিসেস নালা মে আই সি দ্য ল্যাবরেটরি প্লিস ।“ মাথা নাড়িয়ে ভদ্রমহিলা সম্মতি প্রকাশ করলেন । আমি তার পিছু পিছু কয়েকটা ঘর ছেড়ে খানিকটা দক্ষিণ দিকের অপেক্ষাকৃত বড় একটা হল ঘরে ঢুকলাম । মিসেসে নালা আমাকে ল্যাবরেটরি দেখিয়ে বেড়িয়ে গেলেন । নানান যন্ত্রপাতিতে ঘর ঠাসা ।
হঠাৎ একটা বয়ামের দিকে আমার নজর যায় । কাছে গিয়ে দেখি ভিতরে একটা সন্দপ লবণের মত একটা সাদা স্ফটিক । কাঁচের উপর লেখা – পিউরিন মিথাইল জ্যান্থিন এলকালয়েডএ যে ক্যাফিন ! আকস্মিক প্রোফেসরের ক্ষীণ আর অ্যাবিনুশের চীৎকারে ছুট লাগালাম বেডরুমের দরজা হাট করে খোলা মিসেস নালা অ্যাবিনুশের একটা হাত ধরে রাখার চেষ্টা করেছেন খাটের নীচে মোটা গালিচার উপর পরে আছেন প্রোফেসর
দৃশ্যটা দেখে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম । সেদিনের সেই শান্ত ছেলেটির চোখ দুটো লাল , শরীরে মনে হচ্ছে কোন আদ্ভুত প্রানী ঢুকে ওকে হিংস্র করে ফেলেছে । কিন্তু ওটা কী ডান হাতে ? কাছে যেতেই লক্ষ্য করলাম একটা ইনজেকশনের সিরিঞ্জ , তাতে হাফ কালচে সবুজ তরল । অবিনাশ পরে থাকা প্রোফেসরের শরীরে সিরিঞ্জটা ঢোকানোর জন্য হাঁটু গেড়ে ঝুঁকে পরলো । আমি মুহূর্তের মধ্যে ওকে সজোরে একটা ধাক্কা মারতেই অত বড় শরীরটা ছিটকে পড়ল কাঁচের টেবিলের গা ঘেঁষে ।
অশতিপর প্রোফেসরকে হাত দুটো ধরে বেশ কষ্ট করে বিছানার উপর বসালাম । ওর মুখে চোখে এখনও একটা আতঙ্কের ছায়া । অদূরেই মাথা গোঁজ হয়ে বসে ছিল অবিনাশ । আমি ওর দিকে এগিয়ে ঝাঁঝিয়ে বললাম , “ জানো এর জন্য তোমার জেল হতে পারে ! আর আমি পুলিশ ডাকবোই ।“
অদ্ভুত ব্যাপার পুলিশের কথা শুনেও অবিনাশ চোখে কোন ভয়ের লেশমাত্র দেখতে পেলাম না বরং শান্ত ভারী গলায় বলল, “ইউ মে স্যার । আমি আমার প্রটেষ্ট করবোই ।“
“ কিসের প্রটেষ্ট ? একজন বৃদ্ধ মানুষকে আঘাত করে কোন আন্দোলন হয় না , আদালত তোমার এই অনুভূতির কোন মুল্য দেবে না ।“
“ লিভ হিম মাই বয় । ওর এই রাগ অনেককালের। আর এর জন্য দায়ী আমাদের সাদা চামড়ার আমেরিকানরাই । একটা সময়ে  ওদের আমরাই বঞ্চিত করেছিলাম ।ও যখন ছোট ছিল তখন ওর বাবা মারা যানকারণ কী জানো ?”
আমি মাথা নাড়িয়ে না জানালাম । প্রোফেসর বললেন , কালো চামড়ার কয়েকজন সুইমিং পুলে নেমেছিল কিন্তু তারা আর উঠতে পারে নি । মিশিয়ে দেওয়া হয়েছিল বিষ । আর যারা উঠেছিল তাদের কয়েকজন পক্ষাঘাতে তিলে তিলে বেঁচে থাকেমৃতদের মধ্যে ওর বাবাও ছিল ।“ এত কথা বলার পর প্রোফেসর ডোনাল্ড হাঁপাতে থাকেন । মিসেস নালা তার মাথার কাছে বসে সাদা চুলে হাত বুলিয়ে দিতে থাকেন ।
“ অবিনাশ কী ছিল তোমার সিরিঞ্জে , তাড়াতাড়ি বল । কী ইঞ্জেক্ট করেছো ?”
“ আমি বলি , ওটা ছিল হাই ডোজের ক্যাফেন । ব্যাথা কমার জন্য আমি ওকে মাঝে মধ্যে ঠিক মাপ করে দিতে বলতাম কিন্তু আজ ...” কথাটা বলে প্রোফেসর অ্যাবিনুশের মুখের দিকে তাকায়
আই এম সরি ড্যাড কাঁদতে থাকে অ্যাবিনুশ ওরফে অবিনাশ
আমার অবাক হওয়ার পালা এতক্ষণ পর মিসেস নালা মুখ খোলেন ভদ্রমহিলার ঠোঁট তিরতির করে কাঁপছে ওর বাবা মারা যাওয়ার সময় ওর বয়েস খুবই অল্প পেট চালানোর জন্য প্রোফেসর ডোনাল্ডের কাছে আসি উনি আমাদের আশ্রয় দিলেন এবং এক বছরের মাথায় আমাকে বিয়ে করেন অ্যাবিনুশকে নামী স্কুলে পড়ানও ওকে নিজেদের জাতির উপর ক্ষুব্ধ হতে আমি দেখেছি উনি বলতেন এটা অন্যায় কিন্তু অ্যাবিনুশ নিজের অতীত কখনই ভুলতে পারে নি
অ্যাবিনুশের দিকে তাকিয়ে আমি শান্ত গলায় জিজ্ঞাসা করলাম , “ যিনি তোমাদের এত উপকার করলেন তাকেই মারতে চাইলে ?”
অ্যাবিনুশ আমার দিকে হতাশা আর ক্ষোভ মেশানো গলায় বলল , “ স্যার যখন শুনলাম ট্যানিফ্লোরাম রোডিওলার লিকুইড ইঞ্জেক্ট করে ওর আয়ু বাড়াবেন তখন নিজেকে স্থির রাখতে পারছিলাম না কারণ ওরা আমার বাবাকে হত্যা করেছে , ওকে আর বাঁচতে দেব না

দিন সাতেক কাটানোর পর কলকাতার জন্য এয়ারপোর্টে এলাম এখন আমার প্লেন মেঘের আস্তরণ কাটিয়ে চলেছে না আমি সেই ওষুধের তৈরী করার প্রণালী নেই নি নির্দিষ্ট চাবি ঘুড়িয়ে প্রোফেসর বার করেছিলেন সেই ধাঁধাঁর কাগজটি অ্যাবিনুশকেও আমি ডেকে নিয়েছিলাম ও দেখার কিছুক্ষণ পরেই আমাকে অবাক করে উত্তর দেয় প্রোফেসর আর মিসেসে নালার কাছে আমি কৃতজ্ঞ কারণ তাদের ছেলে এনিংমাটোলজিষ্ট হওয়া সত্ত্বেও এতকাল বুক দিয়ে আগলিয়ে রেখেছিলেন কাগজটা
যাওয়ার সময় প্রোফেসরকে ডেকে বলেছিলাম যে সকল ব্ল্যাক আমেরিকার সেই শারীরিক ক্ষতির মুখে আজও মৃত প্রায় তাদের জন্য ওটা ব্যবহার করতে আমি চোখ বন্ধ করে চিন্তা করতে লাগলাম সেই ধাঁধাঁটার
দেঁহু তুলসী এক রতি নারায়ণ হৃদে ,
রাধা নাম গাহি পাপ মুকত ধরণীতে
হনুমান আনি লেপিলো সাতেক রতি সঞ্জীবনী ,
মৃত লক্ষ্মণ দেহে হইল লক্ষণ তীব্র এক জীবনী
মুই অধম বঙ্কু  টেলোমিয়ার বক্ষে ,
সমুদ্র পারে রাখি গুপ্ত এক কক্ষে ।।

No comments:

Post a Comment

আত্মারা যখন অন্য গ্রহে

১ রা তটা এখন বেশ গভীর । টুক করে শব্দ হতেই কান সজাগ হয়ে উঠলো অ্যাটলাসের । মাথার মধ্যে টিঁ টিঁ কী বেশ ক্যাল্কুলেশন করেই এগিয়ে গেল দরজার ...